[ AND INSPIRE THE BELIEVERS ] - Sa'ad bin Atef al-Awlaki Hafizahullah - AQAP - Bangla subtitle

123 Views
Dawah
0
Published on 12 Jun 2025 / In Preaching

⁣আল কায়েদা ইন দ্য অ্যারাবিয়ান পেনিনসুলা
(আরব উপদ্বীপ) নেতা শাইখ সাদ বিন আতেফ আল-আওলাকি (হাফিযাহুল্লাহ), ২০২৪
সালে দলটির নেতৃত্ব গ্রহণের পর প্রথমবারের মতো একটি নতুন ভিডিও বক্তব্য
দিয়েছেন। আল-মালাহিম মিডিয়া কর্তৃক প্রকাশিত আওলাকির ৩৭ মিনিটের বক্তব্যের
মূল বিষয়বস্তু ছিল, ২০২৩ সালে থেকে গাজা উপত্যকায় শুরু হওয়া
ইহুদিবাদী-ক্রুসেডারদের চলমান গণহত্যা।
“মুমিনদের
উদ্বুদ্ধ করুন” শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিওটিতে শাইখ আওলাকি গাজা এবং এই
অঞ্চলের উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ সম্পর্কে আকর্ষণীয় বক্তব্য দিয়েছেন।
তিনি তার বক্তব্যে সারা বিশ্বের মুজাহিদদের ইসরায়েল-সমর্থিত মার্কিন
যুক্তরাষ্ট্রের উপর আক্রমণ বৃদ্ধি করার আহ্বান জানান এবং সমগ্র উম্মাহ ও
মুজাহিদদের এক প্ল্যাটফর্মে একত্রিত হওয়ার আহ্বান জানান। একই সাথে আসন্ন
যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিতে ও অস্ত্র মজুদ করারও পরামর্শ দেন, কেননা এটিই
আল-আকসা মুক্তির পথ।
তিনি বলেন, গাজায়
একটি বর্বর, নিষ্ঠুর এবং নোংরা ইহুদিবাদী-ক্রুসেডারদের আক্রমণ চলছে।
ইতিহাস কখনও এমন বর্বরোচিত আক্রমণ দেখেনি। এই আক্রমণে সকল ধরণের পবিত্র
মূল্যবোধ লঙ্ঘিত করা হয়েছে। শিশু, মহিলা এবং বয়স্কদের হত্যা করা হয়েছে।
এই অঞ্চলে খাদ্য, জল এবং ওষুধ প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়েছে।
শাইখ
আওলাকি তার আলোচনা এভাবে চালিয়ে যান, আমার প্রিয় উম্মাহ! গাজা প্রতিদিন
যে যন্ত্রণা সহ্য করে চলছে তার তালিকা এবং বিস্তারিত বর্ণনা আমি আর বলব না,
কারণ আপনারা ভালো করেই জানেন সেখানে কী ঘটছে। আমি যা বলছি তা একটি স্মারক।
আমাদের দৃষ্টিকোণ থেকে সমাধান কী তা ব্যাখ্যা করার জন্য এটি একটি ভূমিকা।
গাজা এবং সমাধানের পথ:
বিভিন্ন
দল এখন পর্যন্ত অনেক সমাধানের কথা বলেছে, কিন্তু পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন
করতে পারেনি উল্লেখ করে আওলাকি বলেন, এখন একমাত্র সমাধান হল আল্লাহর পথে
জিহাদ করা। আর এখানে যা কিছু ঘটছে তার জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী মার্কিন
যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েলের প্রতি তাদের সমর্থন।
এসময়
ইসরায়েল ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আল-কায়েদা নেতাদের দৃষ্টিভঙ্গি
উপস্থাপন করা হয়, বলা হয় আমাদের পূর্ববর্তীরা এমন সময় যেনো আমাদেরকে না
দেখতে হয়, তাই আগে থেকেই সতর্ক করে আসছিলেন এবং দিকনির্দেশনা দিয়ে আসছিলেন।
কিন্তু আমরা সেগুলোকে গুরুত্ব দেই নি। তবে আজ সেসবের কারণে কাউকে অভিযুক্ত
করবো না। কেননা “আজ নিজেদের দোষারোপ করার এবং বুক চাপড়ানোর সময় নয়, বরং
পদক্ষেপ নেওয়ার সময়” এই বাক্যাংশটি ব্যবহার করে আওলাকি উল্লেখ করেন যে,
“আজ অভিযোগ করার এবং নিজেদের সমালোচনা করার দিন নয়। আজ ঐসমস্ত ব্যাক্তিদের
দোষারোপ করারও সময় নয় যারা পদক্ষেপ নেওয়ার পরিবর্তে নিষ্ক্রিয় ছিলেন,
যারা পদক্ষেপ নিতে বিলম্ব করেছেন, অথবা উম্মাহর নেতাদের আহ্বানে সাড়া না
দিয়ে নিষ্ক্রিয় থেকেছেন। বরং আজ এসব ভুলে গিয়ে নতুন করে পদক্ষেপ নেওয়ার
দিন।”
শাইখ সাদ বিন আতিফ আল-আওলাকি ৩৪
মিনিটের ভিডিও বার্তায়, গাজার সংকট নিরসনের সমাধান করতে বেশ কয়েকটি
গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব উপস্থাপন করেন।
আওলাকি
বলেন যে, “কিয়ামত পর্যন্ত ইহুদিদের সাথে যুদ্ধ ছাড়া সমাধানের আর কিছুই
অবশিষ্ট নেই”। তাই হে মুসলিম উম্মাহ! গাজার জনগণ এবং এই অঞ্চলের সামগ্রিক
পরিস্থিতির কার্যকর সমাধান হল নিম্নরূপ:
১.
এই অঞ্চলের মুসলিম জনগণের কর্তব্য হল আজ গাজায় যা ঘটছে তার বিরুদ্ধে
নাগরিক অবরোধ গড়ে তুলা। বিশেষ করে এই লক্ষ্যে মিসর ও জর্ডানের রাষ্ট্র
প্রধানদের বাসভবন এবং সরকারি অফিসের দিকে যাওয়ার প্রধান সড়কগুলো আপনারা
অবরোধ করুন। বানিজ্যিক এলাকা, সরকারি প্রতিষ্ঠান, মন্ত্রণালয়, বিমানবন্দর
এবং নৌ বন্দরগুলোতে সব ধরনের কার্যক্রম ও সরবরাহ আটকে দিন।
২.
এই অঞ্চলের সকল দেশে, বিশেষ করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার,
ইরাক এবং কুয়েতের, তেল ও খনি কোম্পানি, রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান, ব্যাংকিং
পরিষেবা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, অন্যান্য মন্ত্রণালয় ও গুরুত্বপূর্ণ সরকারি
বিভাগে কর্মরত প্রতিটি মুসলিমের উচিত কার্যক্রম স্থগিত করা এবং দলবদ্ধভাবে
ধর্মঘট করা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এবং অন্যান্য সম্ভাব্য উপায়ে
মিডিয়াতে এটি ঘোষণা করা, যাতে সর্বোত্তম ফলাফল অর্জন করা যায়।
৩.
শাইখ আওলাকি ইরাক এবং সিরিয়া সহ উপসাগরীয় দেশগুলোর “উপজাতি এবং উপজাতি
নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান, তারা যেনো আসন্ন যুদ্ধের জন্য সকল ধরণের
অস্ত্র সংগ্রহ করেন এবং অনিবার্য দিনের জন্য প্রস্তুতি নেন। তিনি আরও বলেন,
সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, একে অপরকে সমর্থন করতে হবে, নিজেদের মধ্যে
সমন্বয় তৈরি করতে হবে। এমনকি প্রয়োজনে এই উপজাতির যুবকদের ফিলিস্তিনে বা
শত্রু কর্তৃক দখল করা অন্য যেকোনো দেশে তাদের নির্যাতিত ভাইদের সমর্থন করার
জন্য সাধারণ সংহতির জন্য প্রস্তুত করতে হবে।”
৪.
শাইখ আওলাকি বলেন যে “এরপর সবচেয়ে বড় দায়িত্ব আলেম ও ধর্ম প্রচারকদের
উপর বর্তায়”। তাই আলেম, ধর্ম প্রচারক এবং উপজাতীয় শেখদের উম্মাহর মনোবল
বৃদ্ধি করা উচিত। বিশেষ করে জনগণ ও তরুণদের আল্লাহর জন্য জিহাদ করতে,
গাজাকে সমর্থন করতে, আল-আকসাকে মুক্ত করতে এবং প্রতিরোধ আন্দোলনে যুক্ত হতে
উৎসাহিত করা উচিত।
৫. তিনি বলেন,
উম্মাহর ধনী ও ব্যবসায়ীদের এবং সাধারণভাবে সকল মুসলিমের উচিত, সাধ্যমতো
অল্প হোক বা বেশি, ভয় ও দ্বিধা ছাড়াই ইদাদ ও জিহাদের কাজে মুজাহিদদের
সমর্থন ও অর্থায়ন করা।
৬. তিনি
উম্মাহর যুবকদের আহ্বান করেন, তারা যেনো ক্রুসেডার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের
বিরুদ্ধে জিহাদের জন্য নিজেদের সশস্ত্র করেন। সেই সাথে তিনি যুবকদেরকে
বুদ্ধিবৃত্তিক, মানসিক, শারীরিক এবং মিডিয়ায় দক্ষতা অর্জনের উপরও জোর দেন।
৭.
শাইখ আওলাকি বিভিন্ন দেশের যুবকদেরকে তাদের কাছাকাছি অবস্থিত আল-কায়েদার
শিবিরগুলোতে যুক্ত হওয়ার পরামর্শ দেন। বিশেষ করে তিনি আরব উপদ্বীপের
মুসলমানদের আহ্বান জানান, তারা যেনো মুজাহিদদের সমর্থন ও শক্তি বৃদ্ধি করতে
এবং গাজায় গণহত্যার প্রধান সমর্থক আমেরিকানদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আল
কায়েদা ইন দ্য অ্যারাবিয়ান পেনিনসুলার সাথে প্রতিরোধ যুদ্ধে অংশগ্রহণ
করেন।
৮. শাইখ আওলাকির বক্তব্যে
জায়োনিস্ট ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ আরবের গাদ্দার শাসকদের হত্যার আহ্বানও
অন্তর্ভুক্ত ছিল। কেননা এই শাসকরা গাজার জনগণের বিনিময়ে ইসরায়েলের সাথে
সম্পর্ক, সমর্থন ও যোগসাজশ জোরদার করেছে। তিনি বলেন “এই গাদ্দার শাসকরা না
থাকলে গাজা অবরুদ্ধ হত না, হাজার হাজার ফিলিস্তিনি শহিদ হতেন না, লক্ষ লক্ষ
লোক বাস্তুচ্যুত হত না।”
৯. আওলাকি
তার বক্তব্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশে পাইলটদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন:
“পাইলটদের উচিত, জায়োনিস্ট ইসরায়েল এবং এই অঞ্চলে ছড়িয়ে থাকা আমেরিকান
ঘাঁটি, সমুদ্রে অবস্থানরত বিমানবাহী রণতরীগুলিতে আঘাত করা। অন্তত পাইলটদের
উচিত, মুসলিম উম্মাহর ঘাড়ে চেপে বসা বিশ্বাসঘাতক ও পুতুল আরব শাসকদের
প্রাসাদে আঘাত করা। কারণ কুকুরের লেজ এবং তার মাথার মধ্যে অপবিত্রতার দিক
থেকে কোনও পার্থক্য নেই।”
১০. শাইখ
আওলাকি ইরাক ও সিরিয়ার মুজাহিদদের উদ্দেশ্যেও বক্তব্য রাখেন। তিনি
সেখানকার জনগণকে ফিলিস্তিনি ভাইদের প্রতি তাদের কর্তব্য পালনের আহ্বান
জানান: তিনি বলেন, আমরা ইরাক ও সিরিয়ার সৈন্যদের, আমাদের সুন্নি মুজাহিদীন
ভাইদের, আমাদের সাহসী বীরদের আহ্বান করছি, আপনারা ফিলিস্তিনের ভাইদের
প্রতি নিজেদের দায়িত্ব পালন করুন, আল্লাহকে ভয় করুন, অবৈধ কোনো যুক্তিতে
তাদেরকে হতাশ করবেন না। কেননা আপনার পাশের মুসলমানরা প্রতি মুহূর্তে কষ্ট
পাচ্ছে। তারা নিহত হচ্ছে, রক্তাক্ত হচ্ছে, অসুস্থ হচ্ছে, ক্ষুধা ও তৃষ্ণায়
ভুগছে।
১১. শাইখ আওলাকি আরও জোর দিয়ে
বলেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৪.৫ মিলিয়ন মুসলিম বাস করেন। তাদের উচিত
ইহুদিবাদের প্রধান সমর্থক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ভাইস
প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, তার আর্থিক সমর্থক ইলন মাস্ক, পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মার্কো রুবিও, প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ, মার্কিন সিনেটরদের হামলার
টার্গেট করা। সেই সাথে সরকারি, সামরিক এবং অর্থনৈতিক সদর দপ্তর সহ গাজায়
জায়োনিস্টদের দ্বারা পরিচালিত গণহত্যার সমর্থনকারী মাইক্রোসফটের মতো
কোম্পানিগুলোকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করা। একই সাথে মুসলিম হ্যাকারদের
কর্তব্য হচ্ছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং উপসাগরীয় অর্থনীতিকে লক্ষ্য করা।
১২.
পরিশেষে গাজার পরিস্থিতি নিয়ে শাইখ আওলাকি হাফিযাহুল্লাহ বলেন যে, গাজায়
যা হচ্ছে তা সব ‘রেডলাইন’ অতিক্রম করেছে। এবার প্রতিশোধ গ্রহণের সময়।
ইহুদিদের জন্য পৃথিবীর কোনও ভূমিই নিরাপদ নয়, অর্থাৎ তাদের বেঁচে থাকার
কোনো অধিকার নেই।

Show more
0 Comments sort Sort By

Facebook Comments